নিজস্ব প্রতিবেদক।
১৯৭১ সালে ৯ মাসের একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এপার বাঙলার বীর সেনানীরা ভারতের সহযোগিতায় পাকিস্তানিদের বিতাড়িত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। আজ সেই দিনে সবাইকে লাল সালাম ও শুভেচছা।
আমরা লাল সবুজের একটি পতাকা পেয়েছি, পেয়েছি একটি সংবিধান ও স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। কিন্তু এখনও কেন যেন মনে হয়, আমরা সেই পাকিস্তানিদের থাবার ভিতরেই রয়েছি। কেন স্বাধীন দেশে আমরা আতংকে থাকবো? আসুন আজকের এই বিজয়ের দিনে শফত গ্রহণ করি 71 সালে যারা বাঙালী নিধন করেছিল, যারা আমাদের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল, যারা আমার মা বোনের ইজ্জতের ওপর আঘাত হেনেছিল…কুষ্টিয়ার বীজনগরের আমার এক দাদি 45 বছর ধরে পথ পানে চেয়েছিল তার স্বামী ফিরে আসবে … তার চোখের সামনে থেকে রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি মিলিটারিরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। কিছুদিন আগে দাদিও মারা গেলেন পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বুক ভরা আত্মনাদ নিয়ে ও বিচারের বাণী বুকে ধারণ করে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার বামনপাড়া গ্রামের খাঁ বাড়িতে আমার ফুপুর বিয়ে হয়েছিল ছোট মেয়েটা ফুপুর সেই সময় পেটে ছিল ১৯৭১ সালের সম্ভবতঃ আগস্ট অথবা সেপ্টেম্বর মাসে বামনপাড়া গ্রামটি পাকিস্তানি আর্মিরা ঘিরে ফেলে যে যার মত তখন পাকিস্তানি হানাদারদের রাইফেলের নল থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই পালিয়ে গিয়েছিল। সেদিন আমার ফুপা ভুলুখা তার বড় ছেলেকে নিয়ে নদী পার হয়ে ওপারে যাচ্ছিলেন হিড়িম দিয়া গ্রামে সে সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে গুলি করে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল বড় ছেলেটা ।সেদিন ফুপা গুলি খাওয়ার আগে বলেছিলেন “আমরা ইন্ডিয়ার লোক গো আমাদেরকে মেরো না”। এই কথা শোনার পর হানাদাররা তাকে পরপর কয়েকটি গুলি করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়! ৭১ সালেই আমার ছোট ফুফু বিধবা হন! ফুফার রেখে যাওয়া সম্পত্তি আজ অন্য লোক ভোগ দখল করছে! অপরের বাড়িতে এখন ফুপুর বসবাস মৃত্যুর প্রহর গুনছে সে! কয়েকদিন আগে তিনি আমাকে টেলিফোন করে বললেন সম্ভবতঃ বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস যেদিন ১৪ই ডিসেম্বর, তিনি আমাকে বললেন “আফরোজ আমি তো ওষুধ কিনতে পারছি না তুমি আমাকে কিছু টাকা দিবে ”
আমি বললাম ”ঠিক আছে আমি পাঠাবো.”.একাত্তরে গণহত্যার শিকার হন তার স্বামী!
তিনি আমাকে বললেন “একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে নির্মমভাবে যারা হত্যার শিকার হয়েছে তাদের নাকি শেখ হাসিনা সুযোগ-সুবিধা দিচেছ ? সরকারের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে কই আমি তো পাচ্ছি না তুমি একটু দেখো না”.. আমি সান্তনা স্বরূপ তাকে বললাম ”ঠিক আছে আমি দেখছি”! স্থানীয় প্রশাসন কর্মকর্তারা যারা আছেন আমি আশা করব আপনারা এই বিষয়টুকু একটু তদন্ত করে দেখবেন!
তাই আসুন, আমরা সফত নেই আমরা বাংলাদেশে আর একটি রাজাকারকে রাখবো না। রাজাকার আলবদর আল শামস ও তাঁদের দোষরমুক্ত বাংলাদেশ চাই। পাকিস্তানি চিন্তা চেতনা ধারণকারীদের বিচার চাই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। বিচার চাই। বিচার চাই।