সোনারগাঁ প্রতিনিধি।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সত্য ঘটনা ধামাচাপা দিতে কোর্টে পিটিসন মামলা দায়ের করে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারী) সকালে সোনারগাঁ জার্নালিষ্ট ক্লাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতা উপজেলার শম্ভপুরা ইউনিয়নের চর হোগলা গ্রামের নাসিরউদ্দীন মেম্বার। তিনি মিথ্যা হয়রানির মামলা থেকে অব্যাহতি ও ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,
গত ২৫ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলন চলাকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সামনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক মোল্লার উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার পরপরই তার নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে তার অনুসারীরা লাঠিসোঁটা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমি ও আমার চরকিশোরগঞ্জ এলাকার আওয়ামী লীগের তৃণমূল
নেতাকর্মীদের মারপিট করে মারাত্মক জখম করে।
হামলার ঘটনায় প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ২৮ জানুয়ারী রাত্রে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
তারই পরিপেক্ষিতে আবু সিদ্দিক মোল্লা,আমি ও আমার নেতাকর্মী ৩৪ জন সহ আরো ৪০/৫০ জনকে আসামী করে ৭ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ কোর্টে হয়রানী মূলক একটি পিটিশন মামলা দায়ের করে,যাহা মিথ্যে ও বানোয়াট।
মামলায় এমন লোকদের নামও এসেছে তারা অতি সাধারণ কর্মী। কেউ কেউ ঐদিন সম্মেলন স্থানে উপস্থিতই ছিলেন না। বক্তব্যে তিনি আরো বলেন,
শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক মোল্লার একক সিদ্ধান্তে এতদিন পরিচালিত হয়ে আসছিলো উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম। একমাত্র সিদ্দিক মোল্লার অনুসারী ছাড়া উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করতে পারতেন না। কারণ হিসেবে জানা যায়,আবু বক্কর সিদ্দিক মোল্লা তার নিজ অনুসারীদের ছাড়া উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে কাউকে আমন্ত্রণ জানাতেন না বরং কোনঠাসা করে রাখতো। সিদ্দিক মোল্লা শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের গত নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। কেন্দ্র থেকে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য নাসির উদ্দিনকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়। ঐ নির্বাচনে উক্ত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার পরিবারের সদস্যরা নৌকার বিপক্ষের প্রার্থী জাতীয় পার্টির আব্দুর রউফ’র পক্ষে কাজ করে। নির্বাচনে নাসরিন উদ্দিনের নৌকা প্রতীক প্রায় তিনশত ভোটের ব্যবধানে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন,গত নির্বাচনে শম্ভুপুরা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীকে ডুবানোর সূক্ষ্ম কারিগর ছিলেন এই আবু বক্কর সিদ্দিক মোল্লা। তার এসব স্বেচ্ছাচারিতার কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের তৃনমুল নেতাকর্মীরা সিদ্দিক মোল্লার বিরোধীতা করে আসছিলেন। তিনি বলেন,শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের গত নির্বাচনে নৌকা ডুবানোর পর এবার উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে উদ্দেশ্য মূলক ভাবে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলন পন্ড করে দিয়েছেন ইউনিয়ন সভাপতি নিজেই।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা চেয়েছিলেন সম্মেলনটি হোসেনপুর স্কুল অথবা কলেজ মাঠে করার। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেনপুর এর পরিবর্তে ছোট পরিসরে এলাহী নগর ঈদগাঁ মাঠে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করেন। এবং এই কর্মী সম্মেলনে সিদ্দিক মোল্লা তার অনুসারীদের ছাড়া তৃনমুলের কোনো নেতাকর্মীকে আমন্ত্রণ জানায়নি। এমনকি তিনি দলের বিভিন্ন ত্যাগী নেতাদের আমন্ত্রণ না জানিয়েও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে মিথ্যে প্রচার করেছেন। আপনারা অবগত আছেন যে ঘটনার পর পরই সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছিলেন, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিক মোল্লার উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারনে ঐদিন নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য তখনই আমরা কর্মী সম্মেলন স্থগিত করি এবং কর্মী সম্মেলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মারপিট করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই সিদ্দিক মোল্লা কোর্টে মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে।
আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জনাই।