নিজস্ব প্রতিবেদক,
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়া এক সন্তানের জননী রোকসানা বেগমকে (৩২) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামী মনির হোসেন (৪৫) ও তার সহযোগী আমির হোসেন (৪০), নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর সদস্যরা।
গতকাল শনিবার দুপুরে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা পিএসসি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জানান, গত ১৮ জুলাই সোনারগাঁও থানাধীন সাদীপুর ইউনিয়নের বাইশটেকী দেওয়ান বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়া এক সন্তানের জননী রোকসানা বেগমকে (৩২) পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ২০ জুলাই নিহতের ছোট ভাই এনামুল হক বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় নয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার ভবেরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি সোনারগাঁওয়ের বাইশটেকী গ্রামের মৃত রাইজ উদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন (৪৫) ও আমির হোসেনকে (৪০) থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানান, ভিকটিম রোকসানা বেগমের স্বামীর সঙ্গে তার বিগত ৭-৮ বছর আগে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকে তিনি তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছোট ভাই এনামুলের বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি জীবিকার জন্য উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের বাইশটেকী গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে জামদানি শাড়ি তৈরির কাজ করতেন। সেই সুবাদে ওই বাড়ির মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেনের সঙ্গে রোকসানার সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে বিয়ের ব্যাপারে চাপ দিলে মনির তার মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর তাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেন।
গত ১৫ জুলাই মনিরের মেয়ের বিয়ের হয়। এরপর রোকসানা গত ১৮ জুলাই বিয়ের দাবিতে মনিরের বাড়িতে অবস্থান নেন। এসময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার বাড়ির বাইরে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়। ভিকটিম তার অবস্থানে অনড় থাকায় মনির হোসেন, তার ভাই গোলজার, খোকন ওরফে খোকা, ছেলে রানা, মনিরের স্ত্রীসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমকে লোহার পাইপ, লাঠিসোঠা দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করে আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় রোকসানাকে মনির ও তার সহযোগীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর সংবাদ জানার পর মনির ও তার সহযোগীরা লাশ হাসপাতালে রেখেই তারা পালিয়ে যায়।