নিজস্ব প্রতিবেদক,
গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে অভিনব কায়দায় শুল্ক ফাঁকি দিয়ে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৩৭ হাজার বোতল বিদেশি মদ ও কোটি টাকা মুল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধারসহ ০২ জনকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে গ্রেফতার পরবর্তীতে উক্ত সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা আব্দুল আহাদকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
১। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার আইন-শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য পরিবহনের বিরুদ্ধে ও র্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
২। গত ২৩ জুলাই ২০২২ তারিখ র্যাব-১১ গোপন সূত্রে সংবাদ পায় যে, মালবাহী কন্টেইনারে করে কতিপয় চোরাকারবারী চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে মাদকদ্রব্য পরিবহন করে চট্টগ্রাম হতে ঢাকার দিকে রওনা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জের একটি আভিযানিক দল গত ২৩ জুলাই ২০২২ তারিখ আনুমানিক ১০:৫০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানাধীন টিপর্দি সাকিনস্থ সালাউদ্দিন সাহেবের পার্কিং স্ট্যান্ড এর সামনে চট্টগ্রাম হতে ঢাকাগামী মহাসড়কের উপর চেকপোস্ট স্থাপন করে সন্দেহজনক ঢাকাগামী বিভিন্ন মালবাহী ট্রাক এবং কন্টেইনারসহ টেইলার তল্লাশী শুরু করে। তল্লাশীর এক পর্যায়ে ২৩ জুলাই ২০২২ তারিখ আনুমানিক ১১:২০ ঘটিকার সময় সন্দেহজনক দুইটি কন্টেইনার টেইলার হতে তল্লাশী পূর্বক বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৬,৮১৬ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মাদকের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মোট ৩১,৫৮,৮০,০০০.০০ টাকা ভ্যাটসহ সর্বমোট মূল্য ৩৬,৮৮,৮০,০০০.০০ টাকা।
৩। অতঃপর এই অবৈধ চালান আমদানী কারবারের সাথে জড়িত ঢাকার ওয়ারীস্থ বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান নগদ দেশী এবং বিদেশী মুদ্রা আটক করা হয় যার পরিমান বাংলাদেশী টাকা ৯৮,১৯,৫০০, নেপালী রুপি ১৫,৯৩৫, ইন্ডিয়ান রুপি ২০,১৪৫, চায়না ইওয়ান ১১,৪৪৩, ইউরো ৪,২৫৫, থাই বার্থ ৭,৪৪০, সিংগাপুর ডলার ৯ এবং মালয়েশিয়ান রিংগিট ১৫। উক্ত অভিযানে গ্রেফতার হয় (১) মোঃ নাজমুল মোল্লা (২৩) পিতা-আকাশ মোল্লা, শ্রীনগর, মুন্সিগঞ্জ, (২) মোঃ সাইফুল ইসলাম @ সাইফুল (৩৪) পিতা- জয়নাল আবেদীন শেখ, লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ।
৪। এরই ধারাবাহিকতায় অদ্য সকালে বিমান বন্দর এলাকা হতে এই চক্রের অন্যতম হোতা আব্দুল আহাদ (২২), পিতা-মোঃ আজিজুর ইসলাম, শ্রীনগর, মুন্সিগঞ্জ’কে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বর্ণিত মাদক আমাদানি ও বিপনন এর সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
৫। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, এই মাদক সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা গ্রেফতারকৃত আহাদ (২২) এবং মিজানুর রহমান আশিক (২৪) সম্পর্কে সহোদর এবং এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা উভয়ের পিতাঃ মোঃ আজিজুল ইসলাম। তারা ০১ বছর যাবত এই অবৈধ কারবারের সাথে জড়িত। তারা সি এন্ড এফ এর যোগসাজশের মাধ্যমে এই অবৈধ মাদক আমদানি কার্যক্রম করে থাকে। এই অবৈধ মাদক আমদানির ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন কোম্পানির কাগজপত্র ব্যবহার করে থাকে। এই চক্রটি দেশে টিভি ও গাড়ির পার্টস ব্যবসার আড়ালে অবৈধ মাদকদ্রব্য বিপনন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। অবৈধ মাদক বিদেশ থেকে আনার পরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, রাজধানীর বংশাল ও ওয়ারীতে ওয়্যার হাউসে রাখা হয়। পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে এই সকল অবৈধ মাদক বিপনন করে থাকে। ক্ষেত্র বিশেষে পরিবহনকৃত ট্রাক/কন্টেইনার হতে সরাসরি ক্রেতাদের নিকট সরবরাহ করে থাকে।
৬। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।