নিজস্ব প্রতিবেদক।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে।মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে মেলার উদ্বোধন করেন আব্দুল্লাহ আল কায়সার এমপি।মেলা চত্বর প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।মেলা চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁ আসনের এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার উদ্বোধনের সময় বলেন, এই লোকজ উৎসব আমাদের সংস্কৃতির অংশ। আমাদের চিত্ত ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরে এই মেলা। উৎসবে বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যও ফুটে উঠে মেলায়।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী নুরুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব। সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল্লাহ আল কায়সার সংসদ সদস্য নারায়ণগঞ্জ -৩ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইমরুল চৌধুরী,নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত প্রশাসক নুর নবী,নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এড শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদসের সাবেক কমান্ডার জেলা টুরিস্ট পুলিশ সুপার নাঈম, প্রমুখ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিলাল হোসেন,
এবারের মেলার আকর্ষণ গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম ‘ভালবাসার তামা-কাঁসা- পিতল শিল্পের’ বিশেষ প্রদর্শনী।
প্রদর্শনী উপলক্ষে গবেষণামূলক একটি ক্যাটালগ প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।অন্যান্য বছরের মতো এবছরও মেলা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ফাউন্ডেশনের পুরো এলাকা বর্ণাঢ্যভাবে সাজানো হয়েছে।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬০ জন কারুশিল্পী মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ৩০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে । এর মধ্যে ঝিনাইদহ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, চট্টগ্রামের নকশিপাখা, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারুশিল্প, নকশিকাঁথা, নকশি হাতপাখা, মুন্সিগঞ্জের শীতলপাটি, মানিকগঞ্জের তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁওয়ের পাটের কারুশিল্প, নাটোরের শোলার মুখোশ শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র, ঢাকার কাগজের হস্তশিল্পসহ মোট ১৭০টি স্টল থাকছে মেলায়।
এছাড়াও লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান,লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকবে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ফাউন্ডেশনে আগত দর্শনার্থীরা মেলা উদ্বোধনের সঙ্গে তাদের কেনাকাটাও সেরে নিচ্ছেন।