নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য হতে উপনির্বাচনে ভোট গণনার সময় দুই পক্ষের সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে হৃদয় (২৫) নামের এক যুবক নিহত হ য়েছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মোশারফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত হৃদয় ভূঁইয়া পিরোজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামের আমির আলী ভূইয়ার ছোট ছেলে।
এ সময় ফারুক ভূইয়া নামের আরো একজন পুলিশের গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মূর্মষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। সে একই এলাকার মৃত কামাল হোসেন ভূইয়ার ছেলে ও নিহত হৃদয় ভূঁইয়ার চাচাতো ভাই।
সরেজমিনে জানা গেছে, বছর খানেক আগে পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মুজিবুর রহমান মারা যাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচন শনিবার ৯ মার্চ ২০২৪ ইং সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট শুরু করে। ভোট গণনা শেষে মোরগ প্রতীকের প্রার্থী আজিজ সরকারকে বিজয়ী ঘোষণা করেন প্রিজাইডিং অফিসার।
এই নির্বাচনে মোরগ প্রতীকে আব্দুল আজিজ সরকার ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ভোটগ্রহণ শেষে আজিজ সরকার মোরগ প্রতীকে ৯২৯ ভোট ও তালা প্রতীকে কায়সার আহম্মেদ রাজু ৮১১ ভোট পান।
এসময় স্থানীয় আওয়ামীলীগের শক্তিধর গ্রুপের পরাজিত প্রার্থী কায়সার আহম্মেদ রাজু ও তার সমর্থকেরা ফলাফল না মেনে ফলাফল পুনরায় গণনা করতে বলে। এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এতে দু-পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে পুলিশ বাধা দিলে তাদের উপরই অতর্কিত হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামীলীগের শক্তিধর গ্রুপ রাজুর সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ সদস্যরা এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। এতে পরাজিত প্রার্থী কায়সার আহম্মেদ রাজুর দুই সমর্থক হৃদয় ও ফারুক গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হৃদয়কে মৃত ঘোষণা করেন। আহত ফারুককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সোনারগাঁ থানা পুলিশের কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
তালা মার্কার পরাজিত প্রার্থী কায়সার আহম্মেদ রাজু জানান, তারা নির্বাচনের ফলাফলের আগেই তার সাক্ষর নেন। পরে মোরগ মার্কার প্রার্থীকে জয়ী ঘোষনা করা হলে তার সমর্থকরা তা সঠিক নয় বলে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এতে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছুঁড়ে। গুলিতে তাদের একজন সমর্থক হৃদয় নিহত হয় এবং ফারুক নামের আরেকজন আহত হয়।
এ বিষয়ে মোরগ মার্কার প্রার্থী আজিজ সরকার জানান, সারাদিন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সংগঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে তাকে জয়ী বলে ঘোষণা করা হলে তার সমর্থকদের নিয়ে বাড়ি চলে আসে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কিভাবে সংঘর্ষ হয়েছে তা সম্পর্কে তার জানা নেই।
সোনারগাঁ থানার এস আই পঙ্কজ সরকার জানান, নির্বাচন পরবর্তীতে ফলাফল ঘোষনা নিয়ে দু-পক্ষের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়েন। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে।