নিজস্ব প্রতিবেদক।
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা।
তিনি জানান, ২০২১ সালের ১১ মে মামুনুল হক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এ কারাগারে স্থানান্তরিত হন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ বিভিন্ন আইনে ৪১টি মামলা রয়েছে।
সর্বশেষ মামলায় উচ্চ আদালতে জামিন লাভের পরে বৃহস্পতিবার বিকালে তার জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছায়।কিন্তু মামলার সংখ্যা বেশি হওয়ায় তা যাচাই-বাছাই করতে সময় লেগেছে। পরে যাচাই-বাছাই শেষে শুক্রবার সকাল ১০টায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
কারামুক্তির পর সহকর্মী ও স্বজনরা মামুনুল হককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে কওমি মাদরাসা কেন্দ্রীক দলগুলোর সহিংসতার ঘটনায় আলোচিত ছিলেন মামুনুল।
সে সময় ঢাকায় বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জে হেফাজত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ১৭ জন।
হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব থাকলেও সংগঠনে মামুনুলের প্রভাব ছিল ব্যাপক। সংগঠনের নীতি নির্ধারণে তার ভূমিকাও ছিল স্পষ্ট। একের পর এক ঘটনা শেষে ওই বছর ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয়রা।
সঙ্গে থাকা নারী সঙ্গীকে নিজের স্ত্রী দাবি করার পর অনুসারীরা হামলা করে মামুনুলকে ছিনিয়ে নেয়। পরে সোনারগাঁয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় হেফাজত কর্মীরা।
এরপর অভিযান শুরু করে পুলিশ। সহিংসতার ঘটনায় একাধিক মামলা করে পুলিশ। রিসোর্টে সঙ্গে থাকা নারীও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। এছাড়া ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের সহিংসতার মামলাগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়।
পরে ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার হন মামুনুল। গ্রেপ্তারের পর কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ সে সময় বলেছিল, মামুনুল হক কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের ‘উসকানি দিয়ে মাঠে নামিয়েছিলেন’, তার উদ্দেশ্য ছিল ‘সরকার উৎখাত করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল’ করা।
মামুনুল ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় জড়িত জঙ্গিদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন এবং তাদের একজনের সঙ্গে প্রায় দেড় মাস পাকিস্তানেও ছিলেন বলে সে সময় পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়।