সোনারগাঁও নারায়ণগঞ্জ থেকে ইয়াকুব হোসেন
নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাদক বিক্রি করতে দেখে ফেলায় তুহিন নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার দুপুরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি এলাকার মোল্লা বাজারের একটি ফার্নিচার দোকান থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন পুলিশ।
নিহত তুহিন পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। সে তার মামা ঝাউচর এলাকার নুরুল হুদার ফার্নিচার দোকানে কাজ করতো। মামাই তাকে পালক ছেলে হিসেবে দেখাশুনা করতো।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, পিরোজপুর ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চেঙ্গাকান্দি এলাকার মোল্লা বাজারে অবস্থিত মেসার্স এন, এইচ ট্রেডার্স নামে ফার্নিচার দোকানে কাজ শেষে রাতে তুহিন দোকানেই ঘুমাতো। মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটায় বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে সে দোকানে ঘুমাতে যায়। বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় দোকান খুলতে দেখা যায় মেঝেতে তার লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশ গিয়ে দুপুরে লাশ উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী জানান, নিহত তুহিন জন্ম হওয়ার ৩ দিন পর তার মা মারা যান। মা মারা যাওয়ার পর মামা নুরুল হুদা তাকে লালন পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই থেকে তুহিন মামাকেই পিতার মতো দেখতো এবং তার দোকানে থাকতো।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, দোকানের পাশে থাকা হিরাঝিল আবাসিক হোটেলে মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করা নিয়ে তাদের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিলো। এ জেরে তুহিনকে হত্যা করেছে তারা। এছাড়া গত কয়েক রাতে দোকানে থাকা অবস্থায় হিরাঝিল হোটেলে মাদকের চালান প্রবেশ করতে দেখে ফেলায় হোটেলে মালিক মোস্তফার ছেলে রনি ও আল আমিন তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করেন স্বজনরা। ঘটনার পর থেকে হোটেল বন্ধ করে হোটেলের মালিক মোস্তফা ও তার দুই ছেলে রনি ও আল আমিন পলাতক রয়েছেন।
নিহতের পালিত পিতা নুরুল হুদা জানান, হিরাঝিল হোটেলের মোস্তফা মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী আল আমিন ও রনি দীর্ঘদিন ধরে এখানে ফেন্সিডিল ও ইয়াবা বিক্রি করে আসছিল। সোমবার গভীর রাতে আল আমিন ও রনি ফেন্সিডিলের কার্টুন হোটেলের পাশের রুমে নিয়ে যাওয়ার সময় তুহিন দেখে ফেলায় তাকে মারধর করে এবং মাদকের বিষয়ে কাউকে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম জানান, সম্ভাবনা ভোরের এক সময় কিশোর তুহিনকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের দুই গালে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিক অবস্থায় পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা বলে মনে হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের পর বুঝা যাবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে।