নিজস্ব প্রতিবেদক।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় পৌরসভা হাতকোপা এলাকার সাদেকুর রহমান ও সাহেলা দম্পতির একমাত্র ছেলে মাকসুদূর রহমান সোহান (৩৪) তার স্ত্রী স্মৃতি জামান (২৮) এর পরকীয়া সহ্য করতে না পেরেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন সোহানের পরিবার ও এলাকাবাসী।
গত ২৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক পৌনে পাঁচ ঘটিকার সময় মাকসুদুর রহমান সোহান তার নিজ বাড়ি উপজেলার হাতকোপা এলাকায় তিনতলা ভবনের তিনতলায় তার শয়নকক্ষে ফ্যান-ঝুলানো রডের সাথে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যা করে।
নিহত সোহানের মা সাহেলা রহমান বলেন, আমার ছেলে তার রুমেই ছিলো, আমি পাশের বাড়িতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ আমার ছেলের বউ স্মৃতি জামান তার বাপের বাড়ি ঢাকার খিলখেত থেকে আমার মোবাইলে কল দিয়ে জানায় যে, আমার ছেলে তার রুমে কিছু একটা অঘটন ঘটাচ্ছে। আমিসহ আমাদের আশপাশের লোকজন নিয়ে দৌড়ে গিয়ে আমার ছেলেকে গলায় ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। সেখান থেকে সকলের সহযোগিতায় আমরা তাকে সোনারগাঁও স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ছেলেকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহত সোহানের মা বলেন, মৃত্যুর খানিকক্ষণ পূর্বেও আমার ছেলে তার স্ত্রী স্মৃতির সাথে ইমু/ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলে কথা বলছিলো। তার সাথে বাকবিতন্ডা সহ্য করতে না পেরে ভিডিও কলে থেকেই আমার ছেলে ফাঁসিতে ঝুলে আত্নহত্যা করেছে।
জানাগেছে, নিহত সোহানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন তদন্তের জন্য সোনারগাঁ থানা পুলিশের হাতে রয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, পরকীয়ার সাথে জড়িত স্ত্রী স্মৃতির সাথে প্রায়ই কথা-কাটাকাটি হতো সোহানের। হয়তো ভিডিও কলে কথা বলার সময় স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়, আর তখনই সহ্য করতে না পেরে সোহান গলায় ফাঁস দিয়ে ভিডিও কলে থেকেই আত্নহত্যা করেছে বলে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবী। যার কারনেই সোহানের স্ত্রী মোবাইল ফোনে তার শাশুড়ীকে নিশ্চিত করে (সোহানের মৃত্যু) অঘটনের ঘটনা জানাতে পেরেছে। এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবী স্ত্রী স্মৃতি জামানই সোহানের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
নিহত সোহানের ছোট খালা ডালিয়া বেগম বলেন, আমার বড় বোনের ছেলে সোহান তার স্ত্রী স্মৃতিকে যথেষ্ট ভালোবাসতো। সে পরিবারসহ সৌদি আরবের তাবু শহরে বসবাস করতো। সেখান থেকে আমাকে অনেকবার মোবাইল ফোনে জানিয়েছিলো তার স্ত্রী ম্যাসেঞ্জারে ছেলেদের সাথে রাতভর চ্যাটিং করে। এসব নিয়ে সেখানেও অনেক ঝগড়া বিবাদ হতো। গত দেরবছর ধরে সোহান সৌদি আরব থেকে তাদের দুই মেয়েসহ স্বপরিবারে দেশে ফিরে আসে। দেশে আসার পর স্মৃতি পরকীয়ায় লিপ্ত হলে আমাকে সোহান কয়েকবার বিষয়টি জানায়। আমি স্মৃতিকে বুঝাতে চেষ্টা করি।
উল্লেখ্য, এর আগে সোহান সৌদিতে থাকাকালিন তার স্ত্রী ডাক যোগে সোহানকে একটি তালাক নামা পাঠায়। তারপর সোহান দেশে এসে স্ত্রীকে বুঝিয়ে আবার নতুন করে সংসার শুরু করে। কে শুনে কার কথা? পরকীয়াই সোহানের স্ত্রী স্মৃতি জামানের ঘার চেপে ধরে। পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়ার কারনেই আত্নহত্যার পথ বেঁচে নেয় সোহান। মাকসুদুর রহমান সোহান ২০০৯ সালে রাজধানীর খিলখেত বটতলা বেপারীপাড়া এলাকার নুরুজ্জামানের মেয়ে স্মৃতি জামানের সাথে ইসলামি শরিয়তে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ওসি তদন্ত আহসান উল্লাহ বলেন, নিহত সোহানের মোবাইল ফোনটি আমার হাতে নেই তবে থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকতে পারে! ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই সোহানের মৃত্যুর কারন জানতে পারবো।